আরও যে ১৭ জেলায় বন্যার শঙ্কা from Bangladesh News

আরও যে ১৭ জেলায় বন্যার শঙ্কা from Bangladesh News
Arambgh TV

ভারতের মেঘালয় ও আসামে ক্রমাগত বৃষ্টির কারণে বাংলাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর মধ্যেই সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, রংপুর ও কড়িগ্রাম জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সবমিলিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের আট বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলায় এক হাজার ২৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

বৃষ্টিপাতের এ ধারা আগামী তিনদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার পর্যন্ত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানান।

২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ বলেন, “রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট  বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ প্রবল বিজলী চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।   একই সঙ্গে সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। ”

এ ছাড়া পরবর্তী দুইদিন (মঙ্গলবার পর্যন্ত) এই বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। এর পরের পাঁচদিন বৃষ্টিপাত কমতে পারে বলে জানান এই আবহাওয়াবিধ।  
 
আজ দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী অঞ্চলের তাড়াশে ৩৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন ছিল সীতাকুণ্ডে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিলো সন্দ্বীপে ২৮২ মিলিমিটার।

বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, আগামীকাল রবিবারের মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের আরো অনন্ত ১৭টি জেলা বন্যায় প্লাবিত হতে পারে। কারণ সেসব এলাকায় বন্যার তীব্রতা বাড়ছে, নদীগুলোর পানি আরো বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। সারা দেশের ৯৫টি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আজ সন্ধ্যায় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী প্রীতম কুমার সরকার বলেন, সিলেট, সুনাগমঞ্জ এলাকায় আরো দুদিন বৃষ্টি হবে। এতে ওইসব এলাকার বন্যার পানি আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে যমুনা নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের আরো কিছু জেলা প্লাবিত হতে পারে। বন্যার এই পানিটা আবার নিচের দিকে নেমে এলে মধ্যাঞ্চলের কিছু জেলাও প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য মতে- ভারতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় তা দেশের কুড়িগ্রাাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা থেকে প্রবেশে করে আরও এগিয়ে আসছে। ফলে জামালপুর, বগুড়া, শেরপুর, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, লালমনিরহাট, নীলফামারি ও পাবনায় বন্যা ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজারে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। বন্যার পানি আরও নীচের দিকে নেমে এলে রাজবাড়ী, ফরিদপুর, শরীয়তপুরসহ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সিলেট, কানাইঘাট, সুনামগঞ্জ ও দিরাইয়ে সুরমা নদী, কুড়িগ্রামে ধরলা, চিলমারিতে ব্রহ্মপুত্র, লরেরগড়ে জাদুকাটা, কলমাকান্দায় সোমেশ্বরী নদীর পানি, নাকুয়াগাঁওয়ে ভোগাই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা নদীর পানিও বাড়ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, গত তিনদিনে চেরাপুঞ্জিতে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এখানে আরো বৃষ্টি হবে। ভারতের মেঘালয় ও আসাম আরো দুইদিন অতি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এসব এলাকার বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের সিলেট ও কুড়িগ্রাম দিয়ে নেমে আসবে। তাই মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যাচ্ছে না।
Next Post Previous Post