দু'জন ছাত্রের জন্য দুই শিক্ষক, তা নিয়েই চলছে পশ্চিমবঙ্গের এই স্কুল

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ক্লাসরুম আছে, চক ডাস্টার ব্ল্যাকবোর্ড সবই আছে, কিন্তু স্কুলে শিক্ষক ও পড়ুয়ার দেখা মেলাভার। স্কুলে আছে দু'জন মাত্র ছাত্র আর তাদের পড়াশুনা করানোর ভার দু'জন শিক্ষকের ঘাড়ে! শুনতে অবাক লাগলেও, বাস্তবে আরামবাগের নারায়ণপুর জুনিয়র হাইস্কুলের চিত্রটা এমনই (Arambagh School)।

Arambagh School
Arambagh School

প্রতিদিন শিক্ষকেরা স্কুলে আসেন, তবে ছাত্রের দেখা নেই। যে দু'জন আছে তারাও রোজ স্কুলমুখো হয় না।

স্কুল আছে, কিন্তু স্কুলে প্রাণ নেই। তবে এই স্কুলের চিত্রটা প্রথমদিকে এমন ছিল না। ২০১১ সালে তৈরি হওয়া এই স্কুলে তখন পড়ুয়াদের ভিড়ে গমগম করত। নিয়ম করে ক্লাস হত, টিফিনের সময় ছেলে মেয়েদের হইহইতে ভরে যেত স্কুল প্রাঙ্গণ। তারপর সেই সংখ্যা কমতে থাকে। শিক্ষকের অভাবে বাবা-মায়েরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের এই স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে।

২০১৫ সালে এই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল সত্তরের বেশি। ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা কমতে কমতে এখন এসে ঠেকেছে মাত্র দুইয়ে! এই দু'জনেরও যে পড়াশুনার প্রতি খুব উত্‍সাহ আছে তা বলতে পারেন না স্কুলের দু'জন শিক্ষক। রোজ স্কুল খুললে তাদের দেখা পাওয়া যায় না। শিক্ষকরা আসেন, থাকেন আবার বাড়ি যান। শিক্ষক দুজন ছাড়াও এই স্কুলে আছে একজন গ্রুপ ডি কর্মী (Group D)। ফাঁকা ক্লাসরুম মাঝে মধ্যে ধুলো ঝাড়েন, সামান্য গল্প গুজব করে বাড়ি যান। এই তাঁদের প্রতিদিনের রুটিন।

স্কুলের শিক্ষিকার কথায়, এই পরিস্থতি খুবই দুঃখজনক। মাত্র দুজন ছাত্র। একজন সপ্তম শ্রেণির অন্যজন অষ্টম শ্রেণির। জানা গেছে, পরের বছর স্কুলের ওই একজন শিক্ষিকা অবসর নেবেন। থাকবেন মাত্র এক। তাই তাঁরা চান, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই স্কুলের পরিকাঠামো মজবুত করে পড়ুয়া ফিরিয়ে আনতে।

এই জেলার ডিআই তপন কুমার বসু জানান, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। স্কুলের পুনরুজ্জীবনে কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে। এখন দেখার কবে ফের ফের স্কুলের স্বাভাবিক জীবন।
Next Post Previous Post